আবু হেনা মুক্তিঃ
রাজনীতি থেকে অবসরে যাচ্ছেন সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ছদ্দবেশে ভারতে পালাতে গিয়ে তিনি এখন জেল হাজতে। ঘনিষ্ঠজনেরা বলছেন রাজনীতিতে আর ফিরবেন না তিনি। তার পুত্র বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দ রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারেন এমন খবর থাকলেও তিনিও আর রাজনীতিতে ফিরবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ।
সরকার পতনের পর নারায়ণ চন্দ্র চন্দ্র তার নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কোন যোগাযোগ করেননি বা জেল হাজতে থাকার পরেও তার পক্ষ থেকে দুর্দিনে থাকা নেতাকর্মীদের কোন সহযোগিতা করেননি।ফলে মাঠ পর্যায়ের আওমীলীগ নেতাকর্মীরা নারায়ণ চন্দ্র চন্দর উপর ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ।
আর নানা সমীকরণে এখন খুলনা ৫ আসনে বিএনপি'র ভরা যৌবন। জামায়েত ইসলামী এখানে বিএনপি'র সাথে জোট না করে আলাদাভাবে নির্বাচনে গেলে সুবিধা হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, ৭০ সাল থেকে এই আসনে সর্বোচ্চ জিতেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরে এই মুহুর্ত পর্যন্ত নিশ্চিত আওয়ামী লীগ এবার নির্বাচন করবেনা।
২০০১ এ ডুমুরিয়া- ফুলতলা নিয়ে গঠিত খুলনা- ৫ আসনে তিনি বিএনপি- জামাত জোটের প্রার্থী হয়ে এমপি হয়েছিলেন । প্রাপ্ত ভোট ছিলো এক লাখ পাচ হাজার সাত শত চল্লিশ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলো আওয়ামী লীগের প্রার্থী, সাবেক ভুমি মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ, প্রাপ্ত ভোট ছিলো এক লাখ এক হাজার একশত বিরানব্বই।
বিএনপি জামাতের সম্মিলিত ভোটের সাথে আওয়ামী লীগের প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ছিলো মাত্র সাড়ে চার হাজারের মতো ভোট। অন্যদিকে, সর্বশেষ ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সদ্য বিদায়ী এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ মাত্র সতেরো হাজার ভোটে জিতেছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে আগামীতে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ নির্বাচনে দাঁড়াবেন না, এটা অনেকটা নিশ্চিত। তার ছেলে ডক্টর বিশ্বজিৎ চন্দ্র প্রার্থী হবার কথা থাকলেও সেখানেও নেগেটিভ বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন করলে সেই ক্ষেত্রে দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এ্যাড. রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, চার চারবারের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বিএমএ সালাম, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আবু সালেহ, খুলনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাইফুল ইসলাম, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আসগর আলি বিশ্বাস তারা। তবে আওয়ামী লীগের নির্বাচন করা না করা সব কিছুই জাতীয় রাজনীতির পরিবেশ- পরিস্থিতি ও ছাত্রদের সেন্টিমেন্টের উপরে নির্ভর করছে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক ভাবে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বিএনপি।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ এর জাতীয় নির্বাচনে নৌকায় সালাহউদ্দিন ইউসুফ,’৭৩ এ নৌকায় আব্দুল বারী,’৭৯ তে নৌকায় সালাহউদ্দিন ইউসুফ, ৮৬ ও ৮৮ তে লাঙ্গল প্রতীকে কর্নেল অব: আব্দুল গফফার, ৯১ ও ৯৬ এ নৌকায় সালাহউদ্দিন ইউসুফ, ৯৬ এর ১৫ ফেব্রুয়ারিতে বিএনপির গাজি আব্দুল হক, ৯৬ এ নির্বাচিত এমপি সালাহউদ্দিন ইউসুফ মারা গেলে ২০০০ এ উপ নির্বাচনে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এম,পি হন।
এর পরে দাড়িপাল্লা প্রতীকে ২০০১ সালে জামাত নেতা মিয়া গোলাম পরোয়ার, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এ বাবু নারায়ন চন্দ্র চন্দ নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হন। দফায় দফায় অনুসন্ধান চালিয়েও জাতীয় পার্টির কোন একটিভিটিজ সেখানে দেখা যায়নি। কমিউনিস্ট পার্টি বা অন্যান্য ইসলামপন্থী দলসমুহের কার্যক্রমও তেমন দেখা যায়নি।